Blogger Widgets

Tuesday, October 11, 2011

অপেক্ষা- পিংকি পুরকায়স্থ (চন্দ্রানী)




এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে,
 গেয়ে উঠে মালবিকারা,
সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে।
কোজাগরী  চাঁদের মুখ হাল্কা ধুঁয়াসা ,
দুই ফোঁটা অশ্রুবিন্দু  গাল বেয়ে ঝরে পড়ে।
পাটের  শীষে লাল শিশির,
চমকে উঠছ যে,
এ তো রক্তের আল্পনা ।
রক্ত, রক্ত আর রক্ত,
মা, তোমার কৃষক ছেলের,

রক্তের অঞ্জলি।
অভুক্ত শিশুর দল, একটুকরো রুটির অপেক্ষায় ,
সবুজ ডোবার জল আজ ক্ষীর সাগর।

Monday, September 26, 2011

ফিরে এসো এবার-চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি )



  কাশ ফুলেরা দোলে দোলে কি যেন বলে চলে,
শারদলক্ষ্মী শুনতে কি পাও?
বন দেবীর দ্বারে দ্বারে,
শঙ্খ ধ্বনির গভীর স্বর।
তোমাকে খুঁজে বেড়ায় পথ শিশুর দল ।
খুঁজে বেড়ায় সেই অবুঝ করুণ চোখ ,
যার পিতা মাতা সন্ত্রাসবাদের শিকার।
রক্ত মাখানো রাজপথে ,
শকুনের সমবেত উৎসব।
আসুরিকতা যে আজ চরমে।
কোথায় রয়েছ জগত জননী,
ফিরে এসো এবার।
বিষ বাষ্পে মুমূর্ষু ধরনী, খুঁজে চলে তোমায় ।
খুঁজে চলে সত্যেন্দ্রের দল, সততাই যাদের শত্রু,
মৃত্যুর কারন।
কোথায় রয়েছ মঙ্গলময়ী , ফিরে এসো এবার।
চোখের কোনে কালো মেঘ নিয়ে,
খুঁজে চলে তোমায় নীরদারা।
যাদের মানসম্মান ভূলুণ্ঠিত ,
রক্ত পিপাসুদের অট্টহাসিতে।
অর্ধদগ্ধ অবস্থায় ,
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ক্যালেন্ডারের পাতায় চোখ রেখে,
খুঁজে চলে তোমায়, পণ প্রথার বলি অনন্যারা।
কোথায় রয়েছ দনুজদলনী,
ফিরে এসো এবার।
ফিরে এসো এবার মর্তলোকে,
আর বসে থেকো না গিরির অপেক্ষায়,
গিরি- মেনকারা ও যে আজ আশ্রয়হীন,
নাম লিখা হয়ে গেছে কবে ,
  বৃদ্ধাশ্রমের সেই আবাসিকদের ঠিকানায়।
সেই স্নেহময়-স্নেহময়ীদের চোখ খুঁজে চলে তোমায়,
কোথায় রয়েছ কল্যানী, ফিরে এসো এবার ।

চিঠি- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি )


আজ সকালে তোমার চিঠি পেলুম ,
কমলা রঙের খামে জড়ানো ,
সাদা চিঠি, একফোঁটা শিউলি গন্ধ মেশানো।
কত কাল হলো , চিঠির দিন বদলে গেছে,
তবু তুমি ঠিক তেমনি আছ স্নেহময়ী ।
প্রতি মহালয়ায় সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ,
সামনের খোলা মাঠে এসে দাঁড়াই ।
চিঠির অপেক্ষায় ।
মেঘ পিয়ন তার হাল্কা সাদা ঝুলি থেকে,
তুলে দেয় তোমার স্নেহমাখানো চিঠি।
শিশির ভেজা প্রতিটি অক্ষর,
 স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতরো হয়ে উঠে।
মনে বার বার প্রতিধ্বনিত হয় ,
“আমি আসছি”
তোমার নিজ হাতে লিখে রাখা,
প্রতিশ্রুতির শব্দ দুটি ।

Wednesday, September 21, 2011

শৈশব

শৈশব
চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি)

অচেনা পথ বেয়ে এগিয়ে যাই,
জীবনের ধর্ম বলে।
থেমে যাওয়া মানেই তো মৃত্যু ।
তাই চরৈবেতি সম্বল।
তবু মাঝপথে দাঁড়িয়ে কখনো,
পেছন ফেরে তাকাই।
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে!
অন্ধকার- আলোর মাখামাখিতে,
আমার গলিপথ কখনো উজ্জ্বল ,
আবার কখনো বা অস্ত্বিত্বহীন।
তারই মাঝে শুনতে পাই “ কু... ঝিকঝিক ঝিকঝিক”
দৃষ্টিপটে ভেসে উঠে ,
সারি বেঁধে ছুটে যাওয়া , তেপান্তরের মাঠের খুঁজে,
একসাথে হেসে উঠে বন ময়ূরীরা।
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে,
লুকিয়ে আছিস বর্তমানের কুহেলিকার আড়ালে,
অন্তরের নাম-গোত্র-পরিচয়হীন নিঃশ্ছিদ্র কক্ষে ,
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে।  
 

Thursday, September 1, 2011

অঙ্গিকার- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ ( পিংকি )

 
 
 অগ্নিকনারা ঝরে পড়ে,
চির অবনত অবগুণ্ঠন পরে ।
আকাশ জুড়ে আগুনের সংসার,
যাত্রারম্ভের আয়োজন মাত্রই ,
পদভারে পৃথ্বী কম্পিতা।
উচ্চস্বরে হেসো না মেয়ে,
হেঁটে যাও ধীর পদক্ষেপে, আনত মস্তকে।
সব ব্যথা থাকুক অব্যক্ত, বিনা প্রতিবাদে,
সেই না হলে আর নারী?
বলে যায় জ্ঞানদীপ্ত পেচকের দল।
নীরবে ঝলসে উঠে সবুজ জীবন ।
তবে দহনেই আনে দীপ্তি ,
তাই আর ভয় করি না ।
জানি উপেক্ষার পথেই সাফল্যের অপেক্ষা ।
তাই হেঁটে যাই তীক্ষ্ণধার ফলার কঠোর পথ ধরে,
বেহুলার মতো,
হে স্বর্গ, তোমার বুকে পদচিহ্ন এঁকে দিয়ে যাব,
এ অঙ্গিকার আমার।

Wednesday, August 31, 2011

নীরব কবিতা- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি )



নিঠুর ঝড়ের প্রলয় খেলায় ,
  ঝরে পড়ে সুখ পরীদের সামিয়ানা ,
  এ খেলাঘর ধুলিস্বাত।
স্বপ্নের জালগুলো জড়িয়ে পড়ে,
কাটা বনের গভীর  বেদনায় ।
পাখির ডানার মতন চোখে ,
 বৃষ্টিধারার স্পর্শ ।
 অথছ এখন আর ভাবায়  না,
মেঘলা দিনের অভিমান,
অশ্রু ভেজা আকাশ ।
নোনা জলের স্বাদ ,
 বয়ে চলে নীরবে ,
অনুভূতির অন্তঃ স্থলে খরস্রোতা নদীর মতন  ।
আবার গড়ব বালির মহল ,
 নোনা সাগরের তীর ঘেঁসে ।
 দেখি কত বার ভেসে যায় আমার,
 ক্ষনস্থায়ী স্বপ্ন মহল।
একদিন রেখে যাব পাথরের বুকে ,
ক্ষনিকের ইতিহাস ,
বুকের রক্তে দুটো নাম। 
মাছরাঙারা মুহুর্তের অবকাশে ,
করে যাবে কত কত কথকতা  ।
সূর্যাস্তের রক্তিম ভঙ্গিমায় ,
ঢেউ এ  ঢেউ এ ভালবাসার গান ।
সন্ধ্যার মৃদু আলোয়,
লিখে যাব নীরব কবিতা ,
তুমি ,আমি  আর স্নিগ্ধ  আকাশ..





Thursday, August 18, 2011

স্বাধীনতা - Independence




স্বাধীনতা - চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি)


তুমি জানো না, স্বাধীন দেশে  আজও আমরা পরাধীন ,
আজ ও শূন্য ভাতের থালা হাতে নিয়ে,
সুইস ব্যাঙ্কের খবর শুনি।
বড় বড় নেতার বড় বড় কেলেঙ্কারি,
কোটি কোটি টাকার হের- ফেরের খবরে,
জমে উঠে আলোচনার সম্ভার,
সেই চায়ের দোকানে, যেখানে কাজ করি আমি।
অথছ জানো হাজার টাকা একসাথে চোখে দেখিনি।
স্কুলে যাওয়ার বড্ড ইচ্ছা ছিল মনে,
তবু মনে হয় না,  কখনও যাওয়া হবে এ জীবনে।
বাবার মৃত্যু পর, রুগ্ন মা আর ছোট বোন কেয়া কে নিয়ে।
পুরো সংসার আমার, সাত বছরের জীবনেই,
দিয়েছি বিসর্জন আমার সব চাওয়া পাওয়ার।
তোমরা নাকি দিয়েছিলে নিজের প্রান,
আমাদের স্বাধীনতা এনে দিতে।
কিন্তু ভেবেছিলে কি কখনো ,
তোমার রক্তের বদলে আনা স্বাধীনতা,
রয়ে যাবে সীমাবদ্ধ সেই ধনীদের হাতে।
 আর বিচারের জন্য হাত বাড়ালে ,
আমার জন্য জালিয়ানওয়ালাবাগ গড়ে উঠে  মুহূর্তে।
আজ ও  সেই রামলীলা ময়দান ই হোক আর আন্নার সেই প্রতিবাদ,
আমাদের আহত করতে মুহূর্তের ভ্রূক্ষেপ নেই,
শাসকের মনে নেই মুহূর্তের দ্বিধা।
অথছ দুষ্কৃতেকারী ধনী পুত্রের তরে ও কত আয়োজন,

আপ্যায়নের বাহার। 
জানো, তোমার অভীষ্ট স্বাধীনতা থেকে আজ ও আমরা,
শত শত আলোকবর্ষ  দূরে।