Blogger Widgets

Monday, May 19, 2014

একাদশ শহীদ চেতনায়, অবচেতন মনে -পিংকি পুরকায়স্থ চন্দ্রানী




আমি সুদূর প্রবাসে,
উনিশের আগুন বুকে,
বাঙলার গান গাই।
ভিনদেশী এক হলুদ পাখী সুর মেলায়,
তারই সুরে।
দুটো অবুঝ পাহাড়ি বালিকা,
মাথা নাড়ে কবিগুরুর সুরের মূর্ছনায়।
আমার ঈশানের বৃষ্টি ভেজা মাটির গন্ধ,
স্পষ্ট হয়,এই মাটির সোঁদা গন্ধে।
তাই হয়তো কৃষ্ণচূড়া ও হাত বাড়িয়ে,
আমার দখিনের জানালায়।
আকাশের নীলিমায়,
ভেসে ওঠা এগারোটি মুখ,
ছায়া ফেলে মনের শার্সি কাঁচে।
মাতৃভাষার মিষ্টতা,
ছুঁয়ে যায় আমার উদাস প্রহর।
কোন অচিন পাখীর ডানায় করে,
এক মুঠো যুঁই, পাঠিয়ে দেই ,
তোমাদের উদ্দেশ্যে।
জেগে থাকো তোমরা চেতনায়,
অবচেতন মনে।

Tuesday, May 13, 2014

নৈরঞ্জনা-পিংকি পুরকায়স্থ চন্দ্রানী


নৈরঞ্জনা তুমি গল্প শোনাও ,
সূর্যোদয়ের সেই প্রত্যুষের।
চেতনার ঢেউ আছড়ে পড়ুক,
ধূলোময় কাঁচের ঠুনকো দেয়ালে।
নৈরঞ্জনা ! তোমার কুলু-কুলু শব্দে,
হারিয়ে যাই, উরুবিল্বের পরিচয়হীন প্রান্তরে,
চেখে নেই সুজাতার পায়েস।
নৈরঞ্জনা , তোমার শ্রান্তবুকে;
ঢেউ জাগাক আবার, পূর্ণিমার চাঁদ।
তন্দ্রাচ্ছন্ন প্রহর, লুম্বিনির চোখে চোখ রেখে।।
নৈরঞ্জনা, তুমি কবিতা লিখ,
গোপার অশ্রুবিন্দুর শিশিরে।
বিষাদসিক্ত অক্ষরেরা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতরো হয়ে উঠুক,
তিতিক্ষার স্নিগ্ধ উজ্জ্বলতায়।
নৈরঞ্জনা , তোমার কূলে-কূলে লালিত হোক,
শাক্যতরুন সিদ্ধার্থের স্বপ্ন।
নিষ্কাম বুদ্ধের মৈত্রীর মন্ত্র,
ছড়িয়ে পড়ুক শতচ্ছিন্ন প্রাণে।
নৈরঞ্জনা , ভেঙে ফেলো এবার মোহের প্রাচীর,
দৃষ্টিপথ ভেদ করে , মুক্তির ঘুড়ি উড়ে চলুক,
ব্রহ্মাণ্ডের শিরায় শিরায়।
নৈরঞ্জনা , মিলে মিশে যাও,
গঙ্গা-পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র , বরাকের কালো জলে।  
ব্যক্ত হোক আবার সেই সর্বত্যাগীর স্নিগ্ধ স্বরূপ,
মানবতা সঞ্জীবনীর আবাহনে।

Monday, June 3, 2013

একটি প্রেমের কবিতাঃ পিংকি পুরকায়স্থ চন্দ্রানী

 

নামহীন কোনো এক বাউল ,
সেই কবে ,শুষ্ক মাটির বুকে এঁকে দিয়ে গেছে;
চোখের জলের আল্পনা!
ঠিক সেখানে,যেখানে আলোছায়া মাখামাখি;
দেখা হয়েছিল কালকেতু ফুল্লরার।
যেখানে খুল্লনা নিবু-নিবু তেলের কুপি হাতে,
পরম মমতায় খুঁজেছিল বহুকাল ধরে,
সেই ছাগ শিশুটিকে।
গোধূলি বেলার শেষ প্রান্তে যখন,
কালো হয়ে আসে জলবহরের ছায়া,
কালিদাসের শিপ্রাকে ছাপিয়ে যায়,
বেহুলার গণ্ডকী ।
সেই অবেলায় বিদ্যা –সুন্দর পাড়ি দেয়,
জ্যোৎস্না মাখা লাল পাহাড়ের দেশে।
যেখানে নীরস পাথরের বুক ভেদ করে,
ঝমঝম ঝরনা রুকনি- টুকনি,
ভেলা ভাসায় সিধু কানুর নামে।
ঘুম-ঘুম রাতের স্বপ্ন ঘিরে, মন কেমন করা;
কুলুকুলু রূপসা, রজকিনী।
রাধার বুক চেরা ভালবাসা,
নিমাইয়ের প্রানের দোতারায় ।

Friday, May 31, 2013

খেলা- পিংকি পুরকায়স্থ চন্দ্রানী



যে তোকে ভয় পায়,
সে আমি নই।
তাই তো বিদ্যুৎ হয়ে জেগে উঠি বারবার,
তোরই বুকের গভীরে।
ভয় মানে যদি হয় রুদ্রের জটাজাল,
কুলুকুলু গঙ্গা হয়ে বয়ে চলি,
সাগরের টানে।
অথবা চাঁদের মতন জ্বলে উঠি ,
আঁধারের দিনগুনা শেষে।
আসলে তোর আমার এই খেলা চিরদিনের,
জন্ম জন্মান্তরের,
তবু জয় আমারই ,
কারণ আমি বেঁচে থাকি,
এই খেলাকে আঁকড়ে ধরে ।

Sunday, May 19, 2013

লহ প্রনাম-পিংকি পুরকায়স্থ চন্দ্রানী

বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়েছে আজ ভোরের আহুতি,
মেঠো পথে থৈ থৈ আলপনা।
তুমি মিশে গেছ ঈশানের হাওয়ায় হাওয়ায়,
রেখে গেছ ঠিকানা সদ্য মা বলতে শেখা শিশুর,
আধফোঁটা বুলিতে।
উনিশের প্রহরী,মৃত্যুজয়ী শহীদ,
লহ প্রনাম, ১৯শের দৃপ্ত মিছিলে,
মাতৃভাষা চতুর্থাক্ষরী মন্ত্রের ,
গম্ভীর সামগানে।

Friday, December 28, 2012

দামিনীর মৃত্যু অথবা আগুনের জন্ম

 
আমানত নামে ঘৃণাটা আর না ছড়ালে ও চলত,
কারুর আমানত নয় ,
খোলা আকাশে একমুঠো স্বস্তির নিঃশ্বাস,
অথবা মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকা,
দাবীটা কি বড্ড বেশী ছিল?
মাতৃগর্ভ থেকে সদর রাস্তা অথবা ফেসবুকের ভুবন,
বলির আয়োজনের বীভৎসতায় ,
সপ্তরথির উন্নাসিক চিৎকারে ,
বাঁচার আশায় শিশু অভিমন্যুর,
ব্যর্থ ডানা ঝাপটানো চক্রব্যূহের দোরগোড়ায় ।
সেই ভাবেই বেঁচে থাকাই যদি জীবন হয়,
তবে মা, নারী হীনতার অভিশাপ লাগুক এবার।
এমন পৃথিবী নিপাত যাক,
যেখানে নারীর গর্ভ থেকে জন্ম নেয়,
নারী মাংস খাদকেরা।

Tuesday, December 4, 2012

বেঁচে থাকার বর্ণমালা

 
রোদ রোদ বিকেল, এক বুক গভীর নিঃশ্বাস,
                                            দিগন্তের জানালায়, জ্বলুক টুপটাপ লন্ঠন চাঁদ।
আমি এঁকে যাব স্বপ্নের রামধনু টান ,
যতবার ও মুছে দিক না, সময়ের রুক্ষ ডাস্টার ।
আমার জলের খাতায় , কবিতার আঁশটে গন্ধ,
তোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শেখার গোপন আশ্বাস।
গীটারের ভাঙা তারে, জীবনের তান ,
ঝর-ঝর ঝরে পড়া মুহূর্তের ছিন্ন পাতায়।
সঞ্জীবনীর ম্যাজিক ছোঁয়ায়,
চোখ খুলুক এবার ঘুম-ঘুম রজনীগন্ধা ।
আবার বাঁচতে শেখা হোক না শুরু সেই ঠিকানায়, 
যেখানে রাত্রি শেষে সূর্য ওঠে।