Blogger Widgets

Wednesday, October 19, 2011

তুমি , আমি আর নীরবতা


প্রিয় বৃষ্টি, তুমি বয়ে যাও হৃদয় জুড়ে,
মন খারাপের রাত টা যেন ধুয়ে মুছে যাচ্ছে ।
হাত বাড়িয়ে বারবার ছুতে পারছি,
তোমার শীতল অবয়ব।
ঝলসে উঠা মনে,স্বপ্নের জল তরঙ্গ ।
আমি আমি হয়ে উঠছি আবার,
অবকাশহীনতার প্রশ্ন আজ আর থাক,
প্রয়োজনের কথা ভাসিয়ে দেই অপ্রয়োজনের হাতছানি তে,
আজ শুধু তেপান্তরের রূপকথা,
তুমি , আমি আর নীরবতা।

Saturday, October 15, 2011

পরিচয়- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি)


তোমার সাথে পরিচয় গড়ে উঠেনি কখনো,
অথচ ভাবখানা যেন কত দিনের পরিচয়।
মনোবীণায় হাল্কা আঘাত,
বসন্ত বাতাস বুঝি দখিনের বারান্দায়।
তুমি ঠিক যেন আকাশের চাঁদ ,
যাকে ঘিরে কল্পনার জগত।
মেয়েরা তেমনি বোকা,
ভাবে তাসের ঘর দীর্ঘ স্থায়ী।
অথবা জল দিয়ে আঁকা ছবি,
অয়েল পেইন্টিংয়ের মত ।
জানালার কাঁচে জমে থাকা ময়লা,
যখন একদিন কালবৈশাখী ঝড় শেষে  ,
ধুয়ে-মুছে যায় জানালার গরাদ বেয়ে,
তখনই ঘটে পরিচয়।
পরিচয় টা তোমার সাথে কখনো ই গড়ে উঠেনি;
পরিচয় ঘটেছিল সেলুলয়েডের পর্দায়,
তোমার চেহারায় লেগে থাকা মুখশের সাথে,
সারা গায়ে মিথ্যার অলঙ্কার।

Tuesday, October 11, 2011

অপেক্ষা- পিংকি পুরকায়স্থ (চন্দ্রানী)




এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে,
 গেয়ে উঠে মালবিকারা,
সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে।
কোজাগরী  চাঁদের মুখ হাল্কা ধুঁয়াসা ,
দুই ফোঁটা অশ্রুবিন্দু  গাল বেয়ে ঝরে পড়ে।
পাটের  শীষে লাল শিশির,
চমকে উঠছ যে,
এ তো রক্তের আল্পনা ।
রক্ত, রক্ত আর রক্ত,
মা, তোমার কৃষক ছেলের,

রক্তের অঞ্জলি।
অভুক্ত শিশুর দল, একটুকরো রুটির অপেক্ষায় ,
সবুজ ডোবার জল আজ ক্ষীর সাগর।

Monday, September 26, 2011

ফিরে এসো এবার-চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি )



  কাশ ফুলেরা দোলে দোলে কি যেন বলে চলে,
শারদলক্ষ্মী শুনতে কি পাও?
বন দেবীর দ্বারে দ্বারে,
শঙ্খ ধ্বনির গভীর স্বর।
তোমাকে খুঁজে বেড়ায় পথ শিশুর দল ।
খুঁজে বেড়ায় সেই অবুঝ করুণ চোখ ,
যার পিতা মাতা সন্ত্রাসবাদের শিকার।
রক্ত মাখানো রাজপথে ,
শকুনের সমবেত উৎসব।
আসুরিকতা যে আজ চরমে।
কোথায় রয়েছ জগত জননী,
ফিরে এসো এবার।
বিষ বাষ্পে মুমূর্ষু ধরনী, খুঁজে চলে তোমায় ।
খুঁজে চলে সত্যেন্দ্রের দল, সততাই যাদের শত্রু,
মৃত্যুর কারন।
কোথায় রয়েছ মঙ্গলময়ী , ফিরে এসো এবার।
চোখের কোনে কালো মেঘ নিয়ে,
খুঁজে চলে তোমায় নীরদারা।
যাদের মানসম্মান ভূলুণ্ঠিত ,
রক্ত পিপাসুদের অট্টহাসিতে।
অর্ধদগ্ধ অবস্থায় ,
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ক্যালেন্ডারের পাতায় চোখ রেখে,
খুঁজে চলে তোমায়, পণ প্রথার বলি অনন্যারা।
কোথায় রয়েছ দনুজদলনী,
ফিরে এসো এবার।
ফিরে এসো এবার মর্তলোকে,
আর বসে থেকো না গিরির অপেক্ষায়,
গিরি- মেনকারা ও যে আজ আশ্রয়হীন,
নাম লিখা হয়ে গেছে কবে ,
  বৃদ্ধাশ্রমের সেই আবাসিকদের ঠিকানায়।
সেই স্নেহময়-স্নেহময়ীদের চোখ খুঁজে চলে তোমায়,
কোথায় রয়েছ কল্যানী, ফিরে এসো এবার ।

চিঠি- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি )


আজ সকালে তোমার চিঠি পেলুম ,
কমলা রঙের খামে জড়ানো ,
সাদা চিঠি, একফোঁটা শিউলি গন্ধ মেশানো।
কত কাল হলো , চিঠির দিন বদলে গেছে,
তবু তুমি ঠিক তেমনি আছ স্নেহময়ী ।
প্রতি মহালয়ায় সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ,
সামনের খোলা মাঠে এসে দাঁড়াই ।
চিঠির অপেক্ষায় ।
মেঘ পিয়ন তার হাল্কা সাদা ঝুলি থেকে,
তুলে দেয় তোমার স্নেহমাখানো চিঠি।
শিশির ভেজা প্রতিটি অক্ষর,
 স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতরো হয়ে উঠে।
মনে বার বার প্রতিধ্বনিত হয় ,
“আমি আসছি”
তোমার নিজ হাতে লিখে রাখা,
প্রতিশ্রুতির শব্দ দুটি ।

Wednesday, September 21, 2011

শৈশব

শৈশব
চন্দ্রানী পুরকায়স্থ (পিংকি)

অচেনা পথ বেয়ে এগিয়ে যাই,
জীবনের ধর্ম বলে।
থেমে যাওয়া মানেই তো মৃত্যু ।
তাই চরৈবেতি সম্বল।
তবু মাঝপথে দাঁড়িয়ে কখনো,
পেছন ফেরে তাকাই।
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে!
অন্ধকার- আলোর মাখামাখিতে,
আমার গলিপথ কখনো উজ্জ্বল ,
আবার কখনো বা অস্ত্বিত্বহীন।
তারই মাঝে শুনতে পাই “ কু... ঝিকঝিক ঝিকঝিক”
দৃষ্টিপটে ভেসে উঠে ,
সারি বেঁধে ছুটে যাওয়া , তেপান্তরের মাঠের খুঁজে,
একসাথে হেসে উঠে বন ময়ূরীরা।
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে,
লুকিয়ে আছিস বর্তমানের কুহেলিকার আড়ালে,
অন্তরের নাম-গোত্র-পরিচয়হীন নিঃশ্ছিদ্র কক্ষে ,
নাহ, তুই হারিয়ে যাস নি তবে।  
 

Thursday, September 1, 2011

অঙ্গিকার- চন্দ্রানী পুরকায়স্থ ( পিংকি )

 
 
 অগ্নিকনারা ঝরে পড়ে,
চির অবনত অবগুণ্ঠন পরে ।
আকাশ জুড়ে আগুনের সংসার,
যাত্রারম্ভের আয়োজন মাত্রই ,
পদভারে পৃথ্বী কম্পিতা।
উচ্চস্বরে হেসো না মেয়ে,
হেঁটে যাও ধীর পদক্ষেপে, আনত মস্তকে।
সব ব্যথা থাকুক অব্যক্ত, বিনা প্রতিবাদে,
সেই না হলে আর নারী?
বলে যায় জ্ঞানদীপ্ত পেচকের দল।
নীরবে ঝলসে উঠে সবুজ জীবন ।
তবে দহনেই আনে দীপ্তি ,
তাই আর ভয় করি না ।
জানি উপেক্ষার পথেই সাফল্যের অপেক্ষা ।
তাই হেঁটে যাই তীক্ষ্ণধার ফলার কঠোর পথ ধরে,
বেহুলার মতো,
হে স্বর্গ, তোমার বুকে পদচিহ্ন এঁকে দিয়ে যাব,
এ অঙ্গিকার আমার।